Bengali Poems

Read Bengali poems & short stories by Rina Ghosh. Please feel free to comment on the posts.

লিপিকার দিনলিপি




১০ই আগস্ট
  
পূজো করতে বসেছি আর শিরিণের ফোনটা এলো ।
       মোবাইলটা পাশেই রাখা ছিল আসনে বসেই হাত দিয়ে তুলে বললাম, “হ্যাঁ বল”, যদিও জানা ছিল কি বলবে ।
       ঠিক তাই, “না রে ফোন করেনি” দীর্ঘশ্বাস ফেলে শিরিণ জবাব দিল ।
 গত কয়েকদিনের মত আবার শুরু হল আমাদের সেই একই বার্তালাপ, কেন ফোন করছেনা, কি কারণ হতে পারে, কে কি বলেছে আবার আমাকে নতুন করে শুনতে হল ।
      প্রণয় সোফায় বসে অপেক্ষা করছিল খাবার জন্য । আমার পূজোটা শেষ করেই খাবার বাড়তাম ।
       শিরিণের ফোন আসা মানে পাক্কা একঘণ্টা , এদিকে আমি আসনে বসে আছি, ওর কথা শেষ হলে তবে পূজো শুরু করব। দুপুর একটা বেজে গেছে। পূজো করতে মিনিমাম পনেরো মিনিট তো লাগবেই। কখন ও ফোন টা ছাড়বে কে জানে !
        উদ্বেগ বাড়ছিলো কিন্তু ওর ওপর রাগ করতে পারলাম না। আমি ছাড়া আর কাউকে তো ওর মনের কথাটা বলতে পারছেনা !
 আমিও খুব চিন্তায় পরে আছি , সত্যি তো আজ আট দিন হয়ে গেল ভদ্রলোক কোন খবর দিলেন না ! বেচারী শিরিণ তো মন দিয়ে বসে আছে !
         ওকেই বা দোষ দিই কি করে, রমেণ মিত্র এমন ঘনিষ্ঠতা দেখিয়ে গেছে , যে কোন মেয়েই গলতে বাধ্য । আর শিরিণের বুক তো মরুভুমি , একটু অন্তরঙ্গতার সঙ্কেত ওর শুকনো খাঁ খাঁ মনটা হু হু করে টেনে নিয়েছে ।
      কত না স্বপ্ন দেখেছিল মেয়েটা, কত রঙ্গিন ছবি আঁকতে শুরু করেছিল । জানিনা ভগবান ওর কপালে কি লিখে রেখেছেন !
       যাই হোক, আধাঘণ্টার মধ্যে কথা শেষ করে কোনরকমে নমোনমো করে পূজোটা সারলাম ।
     আড়চোখে সোফায় বসা প্রণয়কে একবার জরীপ করে দেখে বুঝলাম মুখে রাগ জমে আছে । তাড়াতাড়ি টেবিলে খাবার সাজিয়ে “খেতে এস” বলে ডাক দিলাম ।
   আজকে রুই মাছের ঝাল করেছিলাম। এটা ওর খুব প্রিয়, তারিয়ে তারিয়ে খেল। মুখের কঠোর রেখাগুলো কোমল হয়ে এল লক্ষ্য করলাম । আমার বুক থেকেও একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস বেরিয়ে এল, উফ ! কি যে জ্বালায় পরেছি ! স্বামী সামলাবো না কি বন্ধু !! 

                                                                               ( ক্রমশঃ )

0 comments:

Post a Comment