১০ই আগস্ট
পূজো করতে বসেছি আর শিরিণের ফোনটা এলো ।
মোবাইলটা
পাশেই রাখা ছিল আসনে বসেই হাত দিয়ে তুলে বললাম, “হ্যাঁ বল”, যদিও জানা ছিল কি বলবে
।
ঠিক তাই, “না
রে ফোন করেনি” দীর্ঘশ্বাস ফেলে শিরিণ জবাব দিল ।
গত কয়েকদিনের
মত আবার শুরু হল আমাদের সেই একই বার্তালাপ, কেন ফোন করছেনা, কি কারণ হতে পারে, কে
কি বলেছে আবার আমাকে নতুন করে শুনতে হল ।
প্রণয় সোফায়
বসে অপেক্ষা করছিল খাবার জন্য । আমার পূজোটা শেষ করেই খাবার বাড়তাম ।
শিরিণের ফোন আসা মানে পাক্কা একঘণ্টা , এদিকে আমি
আসনে বসে আছি, ওর কথা শেষ হলে তবে পূজো শুরু করব। দুপুর একটা বেজে গেছে। পূজো করতে
মিনিমাম পনেরো মিনিট তো লাগবেই। কখন ও ফোন টা ছাড়বে কে জানে !
উদ্বেগ
বাড়ছিলো কিন্তু ওর ওপর রাগ করতে পারলাম না। আমি ছাড়া আর কাউকে তো ওর মনের কথাটা
বলতে পারছেনা !
আমিও খুব
চিন্তায় পরে আছি , সত্যি তো আজ আট দিন হয়ে গেল ভদ্রলোক কোন খবর দিলেন না ! বেচারী
শিরিণ তো মন দিয়ে বসে আছে !
ওকেই বা
দোষ দিই কি করে, রমেণ মিত্র এমন ঘনিষ্ঠতা দেখিয়ে গেছে , যে কোন মেয়েই গলতে বাধ্য ।
আর শিরিণের বুক তো মরুভুমি , একটু অন্তরঙ্গতার সঙ্কেত ওর শুকনো খাঁ খাঁ মনটা হু হু
করে টেনে নিয়েছে ।
কত না স্বপ্ন দেখেছিল মেয়েটা, কত রঙ্গিন ছবি
আঁকতে শুরু করেছিল । জানিনা ভগবান ওর কপালে কি লিখে রেখেছেন !
যাই
হোক, আধাঘণ্টার মধ্যে কথা শেষ করে কোনরকমে নমোনমো করে পূজোটা সারলাম ।
আড়চোখে
সোফায় বসা প্রণয়কে একবার জরীপ করে দেখে বুঝলাম মুখে রাগ জমে আছে । তাড়াতাড়ি টেবিলে
খাবার সাজিয়ে “খেতে এস” বলে ডাক দিলাম ।
আজকে রুই
মাছের ঝাল করেছিলাম। এটা ওর খুব প্রিয়, তারিয়ে তারিয়ে খেল। মুখের কঠোর রেখাগুলো
কোমল হয়ে এল লক্ষ্য করলাম । আমার বুক থেকেও একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস বেরিয়ে এল, উফ
! কি যে জ্বালায় পরেছি ! স্বামী সামলাবো না কি বন্ধু !!
( ক্রমশঃ )
0 comments:
Post a Comment